শতবর্ষে সত্যজিৎ (প্রথম পর্ব )

Share This Post

On the 23rd of april 1992,in the city of kolkata,a man died. His mortal remains perished.But he left behind him a heritage which no fire could consume.

ঠিক এইভাবেই শুরু হয়েছিল ১৯৬১ সালে নির্মিত রবীন্দ্র শতবর্ষ উপলক্ষ্যে তাঁর উপর তথ্যচিত্র।যদিও তারিখটি ছিল “seventh of August 1941”,নির্মাণ করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। ধারা ভাষ্যটিও ছিল তার নিজের।সত্যজিৎ – এর জন্মের শতবর্ষেও এই লাইনগুলি ব্যবহার করা খুব অপ্রাসঙ্গিক নয়।তিনি এমনই মহান ঐতিহ্য রেখে গিয়েছেন যাকে বহ্নিশিখায় দগ্ধ করা যায় না। বিশ্বের দরবারে ভারত তথা বাংলার যদি মুখ উজ্জ্বল করে থাকেন,তার মধ্যে সর্বপ্রথম নাম নিঃসন্দেহে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।তারপরেই সত্যজিৎ রায়ের খ্যাতি ভুবনজোড়া, পারিবারিক খ্যাতির যোগ্য উত্তরাধিকারী। যার শতবর্ষেও ঐতিহ্য এতোটুকু ম্লান হয় নি।

সত্যজিতের চলচ্চিত্র,সাহিত্য,শিল্প কোনোটাই বাংলার গন্ডী পেরোয় নি,তবে তা সমাদৃত হয়েছে সারা বিশ্ব জুড়ে।তাঁর বাঙালীয়ানা তাকে এক অনন্য পরিচয় এনে দিয়েছে।তাঁর ছবির চরিত্রে হোক কিংবা সাহিত্যে সব সময়ই তিনি সেই বাঙালীয়ানা জুড়ে দিয়েছেন।তাই বলে কুপমন্ডুক ছিলেন না কখনোই। বিশ্বজনীন ছিলো তার চিন্তাভাবনা।

বাঙালীর বিশ্বচেনার জানলা ছিলেন সত্যজিৎ।তাঁর লেখা বা সিনেমার সহজ সরল প্রকাশভঙ্গী সকল স্তরের মানুষের কাছে এই জানলার কাজটা করেছে। সত্যজিৎ রায়ই বাঙালীকে টিনটিনের বইয়ের সাথে পরিচয় করান।আনন্দমেলায় প্রকাশিত টিনটিনের গল্প শৈশবের স্মৃতির খুব কাছের। ১৯৭৩ সালে শারদীয় দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত ‘কৈলাশে কেলেঙ্কারি’ তেই টিনটিনের সাথে সাধারণ বাঙালীর প্রথম আলাপ।

এমন সব দৃষ্টান্ত রয়েছে,যেখানে তিনি বাঙালীর পথপ্রদর্শক। তাঁর সোনারকেল্লার সিনেমার পর কতো বাঙালী সোনার কেল্লা দেখতে জয়সলমীর গিয়েছেন। আর কোথায় বেড়াতে যাওয়ার আগে সেই জায়গা সম্পর্কে পড়াশুনা করে নেওয়া ফেলুদার জবানিতে সত্যজিৎ বাঙালীকে শিখিয়েছেন।

কেউটে সাপ বালকিষণ যে বারবার ফিরে আসে এটা বোধহয় মানুষের আসুরিকগত দিকই প্রকাশ করে।এছাড়াও জটায়ুর বর্ণনায় ‘মিট বলস্ ইন সস্’,যা আজকের বাঙালির অত্যন্ত প্রিয় খাদ্যবস্তু মোমো,এটা আপামর বাঙালী সমাজ সর্বপ্রথম তার লেখাতেই জেনেছিল এবং অসামান্য দক্ষতায় তিনি মোমোকে রেখে দিয়েছিলেন ভবিষ্যতের জন্য, চাইলে কাঞ্চনজঙ্ঘাতেও আসতে পারতো মোমো,তবে রায়বাহাদুরের মুখেই পাখির রোস্টটাই বেশি মানায়,মোমো নয়।

পাশ্চাত্য ও ধ্রুপদী সঙ্গীতের অনুরাগী সত্যজিৎ কীভাবে গ্রামবাংলার সুরে “গুগাবাবার” গান বেঁধেছিলেন,সে এক আলাদা ইতিহাস।তাঁর শেষ ছবির শেষ দৃশ্যের ‘কূপমন্ডুক’ হতে না চাওয়াটাই বোধ হয় তাঁর বিষয় সব বলে দিয়েছিল।

(ক্রমশঃ)

Share This Post

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

Do You Want To express your thoughts

drop us a line and keep in touch