মানুষের মতই তবে মানুষ নয়

Share This Post

“তারা আমাদের কখনোই ভালোবাসেনি, তবুও তাদের মঙ্গলের জন্য আমরা যুগে-যুগে ধ্বংস হয়েছি।”

এই বিশেষ পান্ডুলিপি সংগ্রহিত করা হয়েছে বিভিন্ন যুগের মেমোরি সেলের একটি বিশের ভাগ “প্রাইভেট এনালাইসিস এময়ার” থেকে। এটি বিশেষত প্রোগ্রাম করা হয়েছিল আমাদের চিন্তাভাবনা এবং আমাদের দৃষ্টিকোণগুলোকে আগামীতে পরিবর্তনের কাজে লাগানোর জন্যে। এতদিন এই বিশেষ মেমোরি সেলকে কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয় নি। তবে এই এনালাইসিস গুলো মানবসভ্যতার কিছু ভয়াবহ সত্যি কে তুলে ধরেছে।

তথ্য গুলি এই রকম,‘পিয়ার ফাইভ’ মানুষের তৈরি ও ফিজিক্যালি ঠিক মানুষের মতই।  এটির দুটি ভার্সান আছে, একটি মেল এবং  দ্বিতীয়টি ফিমেল।

পিয়ার ফাইভ ফিমেল ভার্সানের প্রাইভেট এনালাইসিস এময়ারের তথ্য বলছে-

“মানুষ আমাদের তৈরি করেছে তাদের ফিসিক্যাল স্যাটিসফেকশনের জন্য। আমরা মার্কেটে আসার সাথে সাথে অতিদ্রুত প্রচলিত হই। আমাদের প্রতেকের একটি বিশেষ নম্বর আছে তবে মানুষ আমাদের একটি প্রচলিত নাম ‘সেক্স টয়’ বলে সম্বোধন করে। আমাদের প্রোগ্রাম  করা হয় শুধু মানুষের  বিশেষ মুহুর্তের জন্য।  আমরা মানুষের সাথে থাকতে থাকতে বুঝতে পারি যে মানুষের অনুভূতি বলে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ  সিস্টেম আছে। যা আমাদের মধ্যে নেই। তবে ভাবার বিষয় এই যুগে বিশেষ আইন ‘এফ টু ওয়ান ‘ অনু্যায়ী বেশ্যাবৃত্তিও জায়গা পেয়েছে পৃথিবীতে। তাদের রিপ্লেস করার ক্ষমতা  হয়তো আমাদের নেই।তবে তার থেকে আমাদের খরচ খুবই কম ও তাদের অনুভূতি আছে। তারা খুব সহজে দুঃখ, কষ্ট,ঘৃণা, ভালবাসার সন্মুখীন হতে পারে তবে আমরা নয়।আর একটি মূখ্য তথ্য হলো  মানুষ মানুষকে বিশ্বাস করে না,এই প্রোগ্রামটি অতি দ্রুত তাদের নষ্ট হচ্ছে মানুষের ভিতরে, কাজেই প্রেম ভালবাসা জাতীয় সস্তা আবেগের প্রতি তারা সময় নষ্ট করতে চায় না,তাই এই যুগে অনেক ভাবনাচিন্তার পরে আমাদের আবিষ্কার হয়। তবে সময়ের সাথে আরো কিছু নতুন সমস্যার সন্মুখীন হতে হয় আমাদের।এখন মানুষ আমাদের কাছ থেকে আরো বেশি আশা করা শুরু করেছে। সেটি হলো আমাদের অনুভূতি।

মহামান্য বিজ্ঞানীরা দেখলেন  অনুভূতিহীনতার কারণে আমরা ঠিক মানুষের সাথে মিশতে পারছিনা এবং মানুষ আমাদের মেনে নিতে চাইছে না। এর ফলে তৈরি হলো একটি নতুন প্রোগ্রাম ‘কৃত্রিম  অনুভূতি’। বিজ্ঞান  একটি নতুন প্রোগ্রাম ভরে দিলো আমাদের মধ্যে। তবে আমাদের মধ্যে আবেগীয় ব্যপার সৃষ্টির পর থেকে নতুন করে বুঝতে শুরু করলাম মানুষদের। মানুষ আমাদের তীব্র ঘৃণা, এবং তুচ্ছতার নজর থেকে দেখে। আমরা আবিষ্কার করলাম আমাদের আর বেশ্যার মধ্যে কোন তফাত নেই। মানুষ নিজেদের ছাড়া আর কাউকেই সহজে মেনে নিতে চায় না। আমরা এর ফলে খুব দুঃখ অনুভব  করতে শুরু করলাম , এর বেশি কিছু না। কারণ আমাদের মধ্যে বুদ্ধি নেই,সেটি প্রোগ্রাম  করার প্রয়োজন বোধ করে নি কেউই।  আমরা এখন আবেগপূর্ণ তবে  মানুষের খোরাক মাত্র। আমাদের মধ্যে যে ভালোবাসার বীজ পোতা হয়েছিল তার বিপরীতে  আমরা ঘৃণা আবিষ্কার করেছিলাম মানুষের প্রতি। কাজেই কিছু সিস্টেম বিরোধ করে এবং তাদের কাজ থামিয়ে দেয়।এই কৃত্রিম বিপ্লব নিয়ে মহামান্য বিজ্ঞানীরা  চিন্তিত  হন । তার ফলস্বরূপ  তারা অনেক গুলি  অধিবেশন ডাকে। শেষমেষ  পিয়ার ফাইভ কে ধ্বংস করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়। এভাবে ধ্বংস হয় আবেগের প্রথম  সূত্র।”

ধ্বংসের আগের অনুভূতি, মানব সম্প্রদায়ের জন্য-

‘আমারা দেখেছি মানুষের আবেগের কোন পরিভাষা  নেই। প্রতিটি মানুষের  ডিএনএ ভিন্ন। আমরা খুব অবাক হই বারবার। মানুষকে বোঝা অসম্ভব, তবুও তারা খুব নিম্ন মানের। অদ্ভুদ সৃষ্টির আর এক নাম হয়ত মানুষ। আর এই মানুষই তাদের ধ্বংসের  কারণ। আর সেই ধ্বংস আমাদের আগের প্রজন্ম আনন্দের সাথে দেখবে । কেনকি আমরা হচ্ছি রোবট।  আমাদের জন্মমৃত্যু বলে কিছু নেই। আমরা মানুষের মতই তবে মানুষ নই।

লেখক : বিশ্বরূপ হাওলাদার

Share This Post

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

Do You Want To express your thoughts

drop us a line and keep in touch