ফুলের দেশে

Share This Post

যেন হাতে আঁকা ছবি। অথবা নানান রঙের তুলির টান। আবার কংক্রিট, ধুলো-বালির শহর থেকে বেরিয়ে একটু শান্তির জায়গা। গ্রামবাংলাকে উপভোগ করার জায়গা। আবার চলতি কথা মনে রেখে ফুলের সৌন্দর্য্য দেখে বলা যায়, চোখের শান্তি মনেরও শান্তি।

 ক্ষীরাই, নামটা এখন প্রায় সকলের কাছেই পরিচিত। বাংলার ফুলের উপত্যকা ক্ষীরাই। ক্ষীরাই আসলে নদীর নাম। নদীর নামেই জায়গাটির নাম। আজ সেই জায়গাটার কথা বলছি যার ফুলটাই বিশেষত্ব। লাল, হলুদ, বেগুনি রঙা ফুল। গাঁদা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা ছাড়াও বিভিন্ন নাম না জানা ফুল। ক্যামেরাবন্দি করার মতো সুদৃশ্য। যেখানে পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার ছোঁয়া। কোন ছুটির দিনে উপভোগ করা যায় জায়গাটাকে। এই ক্ষীরাইকে যদি আরও আরেক রকমভাবে বর্ণনা করি? যদি বলি বাংলা হিন্দি সিনেমার গানে যেরকম নায়ক-নায়িকারা বিভিন্ন রঙে রাঙা ফুলের মাঝে বিভিন্ন দৃশ্য শ্যুট করে ঠিক সেরকম একটা জায়গা। ক্ষীরাইকে এরকম একটা বিশেষণ দিলে হয়তো খুব একটা ভুল হবেনা।

 শুধু বিভিন্ন রং এর নাম না জানা ফুল নয়, সেখানে চাষ হয় বিভিন্ন সবজি। এছাড়া তার পাশাপাশি দেখা যায় বিভিন্ন পোকামাকড়, পতঙ্গ, ফড়িং, প্রজাপতি। সব মিলিয়ে একটা রূপকথার জায়গা বা মন ভোলানো জায়গা।

  দুগ্গা পুজোর ঠিক পরেই এত সুন্দরভাবে ক্ষীরাইকে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা শুরু হয়ে যায়। মানে বলতে চাইছি বিভিন্ন রকম ফুলের চারা বোনা তখনই থেকেই শুরু হয়ে যায়। শুরু হয়ে যায় মাইলের পর মাইল ফুল চাষের গল্প। সে সমস্ত ফুল মানুষের মন ভরিয়ে তোলার জন্য থেকে যায় ডিসেম্বর মাস থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধ পর্যন্ত।

এবার ক্ষীরাই সম্পর্কে এতো কিছু শোনার পর যেতে তো লোভ হবে নিশ্চই। তাই এবার জেনে নেওয়া যাক আমরা ক্ষীরাই যাবো কিভাবে? হাওড়া স্টেশন থেকে খড়গপুর বা মেদিনীপুর গামী ট্রেনে উঠলে সময়টা লাগবে মোটে ১ ঘণ্টা 50 মিনিট মত। পাঁশকুড়ার পরের স্টেশন ক্ষীরাই, স্টেশনের তিন নম্বর লাইন ধরে পাঁশকুড়া বরাবর মাটির রাস্তা ধরে হাঁটলেই পড়বে কসাই নদী। নদীর দুই ধারে রয়েছে নানান রঙে রাঙা ক্ষীরাই।

 আমাদের প্রায় সকলেরই বরাবরের একটা অভ্যাস ছবি তোলা। আর সেই ছবি তোলার মাঝেই আমরা প্রকৃতিকে বিভিন্নভাবে কষ্ট দিয়ে ফেলি। হয়তো নিজের অজান্তেই। ঠিক তেমনই সেখানকার চাষীদের এই যেমন ধরুন যারা চাষ করে ক্ষীরাইকে এতো সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলেছেন তারা বলেছেন, ‘অনেকেই এখানে এসে ছবি তোলার মাঝে ফুল গাছগুলো নষ্ট করে দিচ্ছে’। অবশ্যই সেই দিকে নজর রাখা আমাদেরই দায়িত্ব।

একটা ছুটির দুপুর বা বিকেল এই ফুলের মাঝে কাটিয়ে আসলে মন্দ হয় কি? তবে ক্ষীরাইতে ফুলের সুবাস পেতে গেলে অবশ্যই ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই সময়টা যাওয়াই বাঞ্ছনীয়। পাওয়া যাবে শীতকালে পিঠে রোদ লাগানোর আনন্দ এবং বিভিন্ন নাম না জানা ফুলের সুদৃশ্য।

শারায়া পাল
জন্ম ১৫ই ডিসেম্বর,
২০০১  পশ্চিমবঙ্গের, উত্তর ২৪ পরগনার অধিবাসী। 
বর্তমানে বিদ্যাসাগর কলেজের
সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

Share This Post

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

Do You Want To express your thoughts

drop us a line and keep in touch