কিংবদন্তি সঙ্গীত শিল্পী দিলীপকুমার রায় রজনীকান্ত সেনের দৌহিত্র।পেশায় শিক্ষকও বটে, পেরিয়েছেন শতবর্ষ, ১০৪ বছর বয়সে ২০২০ সালে এই করোনাকালেও জীবনযুদ্ধে অনড় তিনি। বলেন ‘ডাক্তার দেখানো ছাড়া আর বেরোনো হয় কোথায়? একটা চেক-আপ দরকার কিন্তু এখন তো বেরোতেই পারব না।’
দিলীপকুমার রায়কে বহু কালজয়ী শ্যামাসঙ্গীতের রচয়িতা হিসাবেও তাকে জানা যায়।‘আমি মন্ত্র তন্ত্র কিছুই জানিনে মা’।তবে পান্নালাল ভট্টাচার্য্যের কণ্ঠে এই কালজয়ী গানের রচয়িতা সাধারণ মানুষের উন্মাদনার আড়ালে থেকে গেছেন। শ্যামাপুজো উপলক্ষে ভক্তিগীতি লিখে এবং সুর করে দেওয়ার জন্য প্রথম আবেদন করেন এক গ্রামোফোন কোম্পানি । এরকম গান আগে লেখার অভ্যাস না থাকলেও শেষ পর্যন্ত লেখার কাজে হাত দিয়েছিলেন।এই গানের গীতিকারের নাম জিজ্ঞেস করলে অনেকেই ঠিক করেন বলতে পারেন না।
১৯১৭ সালে ২৯ এপ্রিল মাসে জন্ম দিলীপকুমার রায়ের।পান্নালাল ভট্টাচার্যকে রজনীকান্ত সেনের গান গাইয়েছিলেন দিলীপকুমারই। তার কথায় ও সুরে “যদি তোর ভূ-মন্দিরের দ্বারে / তোমার লাগি কাঁদি অঝোর ধারে” পান্নালালের কণ্ঠেই রেকর্ড হয় এবং আরও একটি গান ‘আমি সব ছেড়ে মা ধরব তোমার রাঙা চরণ দুটি’। আজও গানগুলি মলিন হয় নি, শিল্পীর কন্ঠ বদলেছে সময়ের কালে তবে গানের স্রষ্টাকে ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর সৃষ্টি। বেশ কষ্ট করেই রজনীকান্তের বড় মেয়ের এই প্রথম পুত্র দিলীপকুমার রায় দীর্ঘ দিন ধরে বাঁচিয়ে রেখেছেন রজনীকান্ত সেনের কালজয়ী এক একটি গান, নিজে গেয়ে, অন্যদের শিখিয়ে, কিছু গানে নিজে সুরকাঠামো দিয়েও। গান গাওয়া তাঁর নেশা, তবে অর্থ উপার্জনের পন্থা হিসেবে তা কখনোই গ্রহণ করেননি।
লেখক : শুভ্রা সাহা