ডিন স্নাইডার ও হাকুনা মিপাকা

Share This Post

ডিন স্নাইডার দক্ষিণ আফ্রিকার একটি সুইস প্রাণীর অভয়ারণ্যের প্রতিষ্ঠাতা। স্নাইডার ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এবং পুনর্বাসন কেন্দ্র, হাকুনা মিপাকা প্রতিষ্ঠা করার জন্য স্নাইডার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বন্দী অবস্থায় জন্ম নেওয়া সিংহের জন্য এটি একটি ৪০০  হাউজ এস্টেট। একটি পৃথক অঞ্চলে জেব্রা, ইমপাল, হায়েনা ইত্যাদির জায়গা রয়েছে। অনুদানের অপেক্ষায় স্নাইডার প্রায় এক ডজনেরও বেশি বার আফ্রিকা ভ্রমণ করেছিলেন, ভূমি পরিদর্শন করতে, যোগাযোগ করতে, স্পনসর সন্ধান করতে  পরিকল্পনাটি বিকাশ করার জন্য। স্নাইডার একজন ব্যক্তিগত সহকারী এবং  একজন কন্টেন্ট ম্যানেজারের সহায়তায় বন্যজীবনের সাথে কথোপকথনে সহায়তা পান।  স্নাইডার স্টিভ ইরউইনের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন  মানুষকে বন্যজীবনের সাথে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা করার জন্য। অনেক কম বয়সে নিজের শহর, বাসস্থান,কাছের মানুষদের ছেড়ে চলে এসেছেন বন্যপ্রাণীদের জগতে। আলাদা পরিবেশ, সবই বন্য বন্ধু, নিশ্চিন্তে  শান্ত এক জীবন কাটানো তাদের সাথে,রক্ষণাবেক্ষণ,সেই কাজটাই করেছেন স্নাইডার। বন্ধুর তালিকায় রয়েছে  সিংহ, চিতা, হায়েনা ইত্যাদি। রোমাঞ্চপ্রিয় স্নাইডার এই  অ্যাডভেঞ্চারের মধ্য দিয়েই জীবন কাটাচ্ছেন এক অনাবিল আনন্দে আফ্রিকার মতো মহাদেশে। সুইজারল্যান্ডের অধিবাসী তিনি,তার পড়াশোনার বিষয় ছিল ফিনান্স

মাত্র ২১ বছর বয়সে একটি স্টার্ট-আপ কোম্পানি শুরু করেন। অর্থনীতি, ব্যাঙ্কিং সেক্টর এসব নিয়ে জীবন অতিবাহিত করছিলেন। কিন্তু  অ্যাডভেঞ্চারের নেশাথেকে তিনি কোনোদিন বিরত থাকতে পারেন নি,মনে পড়ে থাকতো সদা সর্বদা অন্যদিকে,হয়তো এই বন্যজীবন বারংবার হাতছানি দিত তাকে। প্রকৃতি, পশুপাখির প্রতি ছিল তার অফুরন্ত ভালোবাসা। বন্যপ্রাণীদের উপর অত্যাচার যেন একসময় তার সহ্যের সীমা অতিক্রম করে যায়। তখনই মনে মনে ভেবে নেন তথাকথিত জীবন ছেড়ে বেরিয়ে আসবেন এক সহজ সরল পৃথিবীতে। জীবন কাটাবেন এক মুক্ত পৃথিবীতে।

এই ভেবেই একসময় কাজের জন্য চলে যান আফ্রিকা।দক্ষিণ আফ্রিকায় অরণ্যের মধ্যে  জায়গা ঠিক করে সেখানে স্যানচুয়ারি এবং রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার করেন। এটিই তার সাধের ‘হাকুনা মিপাকা’ স্যানচুয়ারি।২০১৭ সালে সুইজারল্যান্ডের সমস্ত কিছু ছেড়ে চলে আসেন দক্ষিণ আফ্রিকাতে। সেখানের সব বন্যরাই হয়ে উঠেছে স্নাইডারের সঙ্গী।তারা মাথায়, ঘাড়ে লাফিয়ে পড়ছে, দৌড়োচ্ছে তার পিছন পিছন, খেলছে লুকোচুরি যেন নিতান্তই শিশু,নির্ভয়ে সিংহের মুখের ভিতর হাত রাখছেন তিনি,কথা বলছেন যেন তাদেরই ভাষায়। নিজেদেরই একজন করে নিয়েছে সব বন্যপ্রাণীরা। এভাবেই সবার সাথে মিলেমিশে থাকছেন স্নাইডার। আসলে তার মতে পুরো ব্যাপারটাই মনস্তত্ত্বের ওপর নির্ভরশীল। অত্যাচার না করে ওদের মতো করে মিশলে বন্যরাও মানুষের সাথে সাবলীল হয়ে ওঠে। তিনি বলেন যে  আমরা এদের চিনতেই পারিনা সঠিকভাবে। কোনোরকম সুরক্ষা ছাড়াই ওদের কাছে যান তিনি।মারামারি,খুনসুটিও হয় মাঝে মধ্যে, তাই আঘাতের চিহ্নও রয়েছে তার শরীরে। তবে পরস্পরকে ছাড়া  তারা একদমই থাকতে পারেন না। নিজের এমন কাজের দ্বারা সমস্ত পৃথিবীকে বন্য প্রাণ রক্ষার জন্য অনুরোধ করেন ডিন স্নাইডার।  

লেখক : শুভ্রা সাহা, জয়েন্ট এডিটর অফ রিসাইটাল স্ফেরিকাল।

তথ্যসূত্র :

  • ইন্টারনেট
  • ডিন স্নাইডারের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট
  • ডিন স্নাইডার সংক্রান্ত নিউজ,ভিডিও

Share This Post

Subscribe To Our Newsletter

Get updates and learn from the best

More To Explore

Do You Want To express your thoughts

drop us a line and keep in touch